২৮৬১

কাফেরগণ এইরূপ অভিযোগ করিয়া বেড়াইত যে, মহানবী (সাঃ) নিজেই ‘কুরআন’ রচনা করিয়া বেড়ান, ইহা আল্লাহ্‌তা’লার অবতীর্ণ বাণী নহে। এই আয়াত তাহাদের উক্ত অভিযোগকে যুক্তিদ্বারা খণ্ডন করিতেছে। ইহাতে চ্যালেঞ্জ প্রদান করা হইতেছে যে, মহানবী (সাঃ) যদি আল্লাহ্‌র বাণী-প্রাপ্ত না হন এবং তিনি নিজেই যদি এই বাণীর প্রণেতা হইয়া থাকেন, তাহা হইলে কুরআনের মত এত মধুর, প্রজ্জল ভাষা ও এত অসম্ভব উচ্চমার্গের রচনাশৈলী-সম্বলিত একটি পুস্তক তাহারা প্রণয়ন করিয়া দেখাইয়া দেউক, যাহা কুরআনের মতই মানুষের শত-সহস্র প্রকারের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখিয়া তাহার নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জটিল সমস্যাবলীর সমাধান দিতে পারে; যাহা কুরআনের মতই অনুসারীদের জীবনের উপরে আপন প্রভাব এমনভাবে বিস্তার করে যে, তাহারা পরিবর্তিত মানুষ হইয়া যায়, যাহাতে উহা কুরআনের মতই চির-সত্যের ও অমর শিক্ষার ভাণ্ডার বলিয়া গণ্য হইতে পারে। কাফেরগণকে বার বার আহ্বান করা হইয়াছে যে, ব্যক্তিগতভাবে তো দূরের কথা, সমন্বিত ও সম্মিলিতভাবে, মানুষ ও জিন্ন্‌ সকলের সাহায্য নিয়া একসাথে হইয়াও তাহারা কুরআনের মত গ্রন্থ রচনার চেষ্টা করিয়া দেখিতে পারে। কুরআন স্বয়ং বলিতেছে, তাহারা এমন গ্রন্থ কোন মতেই রচনা করিতে পারিবে না, কেননা ইহা মানব-রচিত গ্রন্থ নহে যে অন্য মানবও সেইরূপ রচনা করিতে পারিবে। ইহাতো মানবাতীত বাণী— স্বয়ং আল্লাহ্‌তা’লার মুখ-নিঃসৃত বাণী। দেখুন ২ঃ২৪, ১৪ঃ২৫, ১৭ঃ৮৯।