২৮০১

পূর্ববর্তী আয়াতে অবিশ্বাসীদের এই আপত্তির উল্লেখ করা হইয়াছে যে, তাহারা যখন মরিয়া হাড়গোড়সহ ধূলিকণাতে পর্যবসিত হইয়া যাইবে, তখন তাহারা পুনরায় উত্থিত হইবে কিরূপে। এই প্রশ্নেরই উত্তর এই আয়াতে দেওয়া হইয়াছে এবং বলা হইয়াছে যে, মানুষের শরীর তো চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া নিশ্চিহ্ন হইয়া যায় ঠিকই, কিন্তু তাহার আত্মা কস্মিনকালেও বিনষ্ট হয় না।পরজগতে তাহার আত্মাকে এক নূতন দেহ প্রদান করা হইবে এবং ইহকালে সে ভাল-মন্দ যাহা কিছু করিয়াছে, নূতন দেহধারী আত্মাকে তাহার জন্য হিসাব দান ও জবাবদিহি করিতে হইবে; কেননা তাহার ইহলৌকিক কার্যাবলী পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে ‘এক অবিনশ্বর হিসাব-খাতায় সংরক্ষিত রহিয়াছে’। ইহার অর্থ ইহাও হইতে পারে যে, বস্তু-জগতের সবকিছুই যখন অণু-পরমাণুতে পরিণত ও বিচ্ছিন্ন হইয়া নিশ্চিহ্ন হয়, তখন তাহাও ঐ সংরক্ষণ-খাতায় তথা আল্লাহ্‌তা’লার জ্ঞানে সংরক্ষিত থাকে। এই আয়াত দ্বারা এই কথাও বুঝাইতে পারে যে, কোন কিছু সৃষ্টি করিতে গেলে যেমন কি কি জিনিষ ও উপকরণ, কি কি পরিমাণে, কি কি অবস্থায়, কি কি ভাবে সংমিশ্রিত করিলে তবে সেই জিনিষ সৃষ্টি হয়, তাহা পূর্বাহ্নে জানা থাকিলে সেই জিনিষ বার বার বানানো যায়, ঠিক সেইরূপ আল্লাহ্‌তা’লা মানবদেহের প্রতিটি বিষয়ের (এনাটোমী) সম্পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। ইহা কিভাবে গঠিত হয় আর কিভাবে লয় পায় উহার পুরাপুরি জ্ঞান আল্লাহ্‌তা’লার রহিয়াছে। অতএব,মানুষের সম্পূর্ণ বিলুপ্তির পরও তাহাকে তিনি আবার সৃষ্টি করিবেন।