২৭৮

সকল আইন-সঙ্গত বিষয়ের মধ্যে, আল্লাহ্‌র কাছে সর্বাপেক্ষা ঘৃণ্য হইল ‘তালাক’ (দাউদ)। তাই এর চারিদিকে বেড়া দিয়া, বাধা দিয়া, সীমা দিয়া, রাখা হইয়াছে। যেমন (ক) ঋতুমুক্ত হওয়ার পরে, যদি স্বামী ঐ পরিষ্কৃত অবস্থার সময়ে স্ত্রী-গমন করিয়া না থাকে, তাহা হইলে কেবলমাত্র সেই সুস্থ অবস্থাতেই একটি তালাক দিতে পারে। (খ) তালাক দেওয়ার কথা ঘোষণা করার পর, স্ত্রী তিনটি ঋতুকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করিবে (প্রায় তিনমাস কাল)। এই সময়টি ‘ইদ্দৎ’ বা অপেক্ষার সময় বলা হয়। এইভাবে, স্বামীকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়, যাহাতে সে তাহার কাজের সকল দিক পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিবেচনা করিতে পারে এবং তাহার মনের মধ্যে যদি ঐ স্ত্রী সম্বন্ধে ভালবাসার অগ্নি-স্ফুলিঙ্গ কিছু থাকিয়া থাকে, তবে সেটা যেন জ্বলিয়া উঠে ও নিজেকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করে। (গ) স্ত্রী যদি গর্ভবতী হয়, তাহা হইলে স্বামী হইতে এই কথাটি লুকাইবে না, কেননা সন্তান প্রসবকাল পর্যন্ত যে দীর্ঘ সময় ব্যয়িত হইবার কথা, সেই সময়ে দম্পতির মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টির যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। (ঘ) পূর্ণ ও অখণ্ডণীয় (বাইন) তালাকের জন্য তিন দফায় তিন মাসে প্রত্যেক ঋতুস্রাবের পর তালাক ঘোষণা প্রয়োজন। প্রথম দফার এবং দ্বিতীয় দফার তালাক ঘোষণার পরেও ইচ্ছা করিলে স্বামী স্ত্রীকে নিজের কাছে নিয়া যাইবার অধিকার ও সুযোগ পায়। এমনকি তালাকের পরবর্তী সময় অতিবাহিত হইয়া গেলেও তৃতীয় দফায় তালাক ঘোষণার পূর্বে স্বামী স্ত্রীকে নূতনভাবে বিবাহ করিয়া মিলিত হইতে পারে।