কুরআনের ভাষা যে কত অতুলনীয়, অননুকরণীয়, উচ্চাঙ্গীন ও পবিত্র, এই আয়াতটি তাহারই এক উজ্জ্বল সাক্ষী। অতি নাযুক একটি বিষয়কে এমনি চমৎকার, বিচক্ষণ ও চিত্তাকর্ষক ভাষায় বর্ণনা করা হইয়াছে যে, বিবাহের দর্শন ও দাম্পত্য-সম্পর্ক একটি মাত্র সংক্ষিপ্ত বাক্যের মধ্যে লিপিবদ্ধ হইয়া গিয়াছে যথা, “তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেত্র স্বরূপ।” স্ত্রী সত্যিই শস্যক্ষেত্রের মত, যেখানে বংশের বীজ বোনা হইয়া থাকে। বুদ্ধিমান কৃষক উত্তম জমি নির্বাচন করে, ভালভাবে তাহা কর্ষণ করে, ভাল বীজ সংগ্রহ করে; অতঃপর, সুসময় পরিপাটিভাবে বীজ বুনে। তেমনি, একজন মো’মেনেরও তাহাই করা উচিত, কেননা শস্য স্বরূপে সে যে সন্তানাদি লাভ করিবে, তাহাদের উপর কেবল তাহার নিজেরই নয় বরং সমগ্র সম্প্রদায়ের ভবিষ্যত নির্ভর করে। এই চরম সত্যকে উপলব্ধি করানোর জন্য এই অমোঘ বাক্যটি ব্যবহার করা হইয়াছে। অতএব, স্ত্রীলোককে কর্ষণ-ভূমি বা শস্যক্ষেত্ররূপে তুলনার মধ্যে নিগূঢ় তত্বকথা রহিয়াছে, যাহা উন্নত মানব-প্রজনন ও নর-নারী সম্পর্কের উপর উজ্জ্বল আলোক-সম্পাত করে।