‘খামারাশ্শয়্আ’ মানে সে বস্তুটিকে আচ্ছাদিত বা আবৃত করিল, অথবা লুকাইল। মদকে ‘খাম্র’ বলা হয়, যেহেতু ইহা ইন্দ্রিয় ও বুদ্ধিবৃত্তিকে আচ্ছন্ন ও অবসাদগ্রস্ত করিয়া ফেলে, হুস্ জ্ঞানকে লুপ্ত করিয়া দেয় এবং মস্তিষ্ককে এত উত্তেজিত করে যে, ইহার উপর মাতালের কোনও দখলই থাকে না। শব্দটি নির্দিষ্টভাবে আঙ্গুর-মদকে বুঝায়। তবে ইহা সকল মাদক দ্রব্যের জন্যই ব্যবহৃত হয় (লেইন)। “মাদকদ্রব্যের ব্যবহার রোগসৃষ্টির অন্যতম কারণ। আর মাদক-সেবীরা সবচেয়ে দূরারোগ্য রোগী। মহামারীর সময় ইহারাই মরে বেশী। কেননা ক্ষত, আঘাত, শ্রান্তি-ক্লান্তি ও রোগাদিতে তাহাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না। তাই, জীবনের সুযোগ তাহাদের জন্য সঙ্কুচিত হয়। ইংল্যাণ্ডের ইনশিওরেন্স কোম্পানীগুলি অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছেন, মাদকাসক্তদের অনুমিত আয়ু সাধারণ মানুষের জীবনের আয়ুর অর্ধেক মাত্র। মদ ও অপরাধের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রহিয়াছে। ব্যায়ার, কুরেলা, গালাভার্ডিন ও সিকার্টের সংখ্যাতত্ব ইহাই প্রমাণ করে যে, শতকরা ২৫ হইতে ৮৫ জন দুষ্কৃতকারী মাতাল। মাতালের বংশের মধ্যেই অনেক কুফল প্রতিফলিত হইয়া থাকে ……। তাহাদের সন্তানদের মধ্যে এপিলেপ্সি (সংজ্ঞা-লোপ রোগ, মৃগী), পাগলামী, বোকামী এবং অন্যান্য ধরণের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক অবক্ষয়াদি ছড়াইয়া যায়” (জিওয়ীশ এনসাই)। “মদ খাওয়ার বহুবিধ কুফল এই কারণেই ঘটিয়া থাকে, যেহেতু মদ সরাসরি স্নায়ুতন্ত্রের উপর আক্রমণ করে। মাতলামীর পরিণত অবস্থায়, বুদ্ধিবৃত্তির ও বিচার ক্ষমতার সাময়িক অবসান ঘটে এবং অনিশ্চয়তা বিরাজ করে” (এনসাই বৃট)। “ইহা সর্ব স্বীকৃত যে, অতিরিক্ত মদপান এবং নৈতিক ও রাষ্ট্রীয় আইন-ভঙ্গের মধ্যে গভীর যোগ-সূত্র বিদ্যমান। উচ্চতর মানবশক্তিগুলির বুদ্ধিসত্তা ও নীতিবোধগুলির প্যারালাইসিস হওয়ার কারণেই, নীচ প্রবৃত্তিগুলি মুক্তমনে আপন খেলা জুড়িয়া দেয়” (এনসাই, রিল, এথ)।