দুই হইতে পাঁচ আয়াতে যেমন ভবিষ্যদ্বাণী রহিয়াছে, তেমনি প্রকৃত ঘটনাবলীরও বর্ণনা রহিয়াছে। প্রকৃত ঘটনা বর্ণনার দিক দিয়া আয়াতগুলি বলিয়া দিতেছে যে, সর্বকালে সর্বমানবের মাঝেই এমন একদল খোদা-ভীরু ও ধর্মপরায়ণ লোক থাকেন, যাহারা কথায় ও কাজে, উপদেশদানেও উপদেশ পালনে তৎপর থাকিয়া এই সত্যের সাক্ষ্য দেন যে, উপাস্যমাত্র একজনই ভবিষ্যদ্বাণী হিসাবে এই আয়াতগুলি ব্যক্ত করিতেছে যে, যদিও এই মুহূর্তে (সূরা নাযেলের সময়) সমগ্র আরব জাতি মূর্তিপূজার অন্ধকারে আপাদমস্তক নিমগ্ন এবং নৈতিক অধঃপতনের চরম তলদেশে নিমজ্জিত, তথাপি তাহাদের মধ্য হইতে একটি বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের উদ্ভব হইবে, যাহারা আল্লাহ্তা’লার মাহাত্ম্য কীর্তন করিয়াও প্রশংসাগীতি গাহিয়া গাহিয়া সারা দেশকে মুখরিত করিয়া তুলিবে। শুধু তাহাই নহে, সমস্ত আরব ভূখণ্ডে তাহারা আল্লাহ্র একত্ব প্রতিষ্ঠিত করিয়া ছাড়িবে। এইভাবে এই শপথের মধ্যে মহানবী (সাঃ)-এর সাহাবীদের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ গুণাবলীর উল্লেখ করিয়া, এই সাহাবীগণকে তওহীদের সাক্ষীরূপে পেশ করা হইয়াছে। এই আয়াতগুলির আরেকটি ব্যাখ্যাও হইতে পারে, যথাঃ- যদি সকল ধর্মের প্রতিনিধিবৃন্দ একটি শান্তিপূর্ণ সম্মেলনে একত্রিত হইয়া নিরপেক্ষ ও নির্মোহ অবস্থায় ধর্মের মৌল নীতিগুলি আলোচনা-পর্যালোচনা করিয়া নিরপেক্ষ ও মুক্ত মনে সত্য যাচাই করিয়া দেখিতেন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীগণ শান্তি রক্ষার দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সকল প্রতিনিধির সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করিতেন, তাহা হইলে ঐ সম্মেলনের অবিসংবাদিত ফলশ্রুতি ও স্বীকৃতি ইহাই দাড়াইত যে, উপাস্য মাত্র একজনই।’