এখানে হযরত নূহ (আঃ)-এর বয়স বা জীবনকাল ৯৫০ বছর বলিয়া উল্লেখ রহিয়াছে। বাইবেলে ৯৫২ বছর বলা হইয়াছে। প্রাচীন কালের নবীগণ যথা – হযরত নূহ, হূদ, সালেহ এবং অপরাপর নবী (আলায়হিমুস্ সালাম) কখন ছিলেন এবং কতদিন বাঁচিয়াছিলেন এই সম্বন্ধে নিশ্চিত তারিখ নিরূপণ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। কুরআন (১৪ঃ১০) বলে ‘আল্লাহ্ ব্যতীত তাহাদিগকে আর কেহ জানে না।’ নয়শত পঞ্চাশ বছর সময় হযরত নূহ(আঃ)-এর ব্যক্তিগত দৈহিক জীবনের পরমায়ু ছিল বলিয়া মনে হয় না, বোধহয় ইহা তাহার শরীয়াতের সময়-কাল। এমতে এই সময় প্রথমে হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর কার্যকাল পর্যন্ত সম্প্রসারিত হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়, কারণ হযরত ইব্রাহীম (আঃ) নূহ (আঃ)-এরই সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন (৩৭ঃ৮৪) এবং তৎপর হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কার্যকাল হইতে হযরত মূসা (আঃ)-এর সময় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। প্রকৃত পক্ষে এক জন নবীর বয়স দ্বারা তাঁহার দায়িত্বকাল ও তাঁহার শিক্ষাকালের সময়-সীমাও বুঝায়। হযরত নূহ (আঃ)-এর বয়সের সীমারেখার বর্ণনা করিতে ‘সানাত’ (বৎসর) এবং ‘আমান’ (সাল) শব্দ দুইটির ব্যবহার হইয়াছে। কার্যতঃ প্রথমোক্ত শব্দ যখন মূল অর্থে মন্দ ধারণা রাখে, তখন শেষোক্ত শব্দটি মৌলিক অর্থে সুধারণা প্রকাশ করে। ইহা দ্বারা প্রতিভাত হয় যে, হযরত নূহ (আঃ)-এর বিধান কালের প্রথম পঞ্চাশ বৎসর ছিল সর্বদিক হইতে আধ্যাত্মিক অগ্রগতি এবং পুনর্জাগরণের সময় এবং অধঃপতন আরম্ভ হওয়ার পর তাঁহার জাতি ক্রমান্বয়ে নৈতিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে নয়শত বছরে অধঃপতনের চরমে পৌঁছিয়াছিল।