‘তারফু’ অর্থ এক নজর, সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি, সরকারী রাজস্ব, ইয়েমেনের সংবাদবাহক (লেইন)। এই অর্থে উক্তির মর্মঃ (১) আপনার দূত ইয়েমেন হইতে আপনার নিকট প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই (২) চক্ষের পলকে, (৩) খাজাঞ্চিখানায় সরকারী রাজস্ব জমা হওয়ার পূর্বে। শেষোক্ত অর্থে এই উক্তির মর্মার্থে, আমার অধিকতর অর্থের প্রয়োজন হইবে না, সরকারী রাজস্বে জমাকৃত টাকা রাণীর সিংহাসন তৈয়ার করিবার খরচের জন্য যথেষ্ট হইবে। ‘যাহার নিকট কিতাবের জ্ঞান ছিল’, উক্তিটি মনে হয় এমন ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করিতেছে যিনি অর্থনৈতিক জটিলতা সম্বন্ধে জ্ঞাত ছিলেন। সম্ভবতঃ তিনি সোলায়মান (আঃ)-এর রাজস্ব মন্ত্রী ছিলেন। বর্তমান এবং পূর্ববর্তী আয়াতে হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর নির্দেশে সিংহাসন তৈয়ার করার দুইটি প্রস্তাবের উল্লেখ রহিয়াছে।(এক) ‘ইফরীত’ কর্তৃক যিনি সোলায়মান (আঃ)-এর তাবু গুটাইয়া প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই সিংহাসন খানা প্রস্তুত করিবার প্রস্তাব করিয়াছিলেন। অপর প্রস্তাবটি সেই ব্যক্তি দ্বারা প্রদত্ত হইয়াছিল যিনি জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। শেষোক্ত ব্যক্তির প্রস্তাব অর্থাৎ সোলায়মান (আঃ)-এর দূত সাবার রাণীর নিকট হইতে তাঁহার পত্রের জওয়াব লইয়া প্রত্যাবর্তনের পূর্বেই সিংহাসনটি প্রস্তুত করার প্রস্তাব উৎকৃষ্টতর ছিল। বর্ণনা-প্রসঙ্গ হইতে বুঝা যায় যে, হযরত সোলায়মান (আঃ) দ্বিতীয় প্রস্তাব গ্রহণ করিয়াছিলেন, কেননা সাবার রাণী তাঁহার সম্মানে সাক্ষাৎ প্রার্থনার জন্য আসিবার পূর্বেই সিংহাসনটির নির্মাণ শেষ করিতে চাহিয়াছিলেন। কারণ সাবার রাণী সেস্থানে আসিয়া সমারোহ-পর্যবেক্ষণ না হওয়া পর্যন্ত হযরত সোলায়মান (আঃ) সেই শিবিরেই অবস্থান করা স্থির করিয়াছিলেন। আয়াতের অন্তর্নিহিত মর্ম ইহাও বুঝায় যে, সোলায়মান (আঃ) সর্বপ্রকার লোক নিয়োগ করিয়াছিলেন— বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ লোক, দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিক, কারিগর এবং প্রকৌশলী।