২১৫২

‘মানতিক্ব্‌’ (ভাষা) ইহার উৎপত্তি নাতাক্কা হইতে, যাহার অর্থ, সে শব্দ এবং বর্ণমালা দ্বারা কথা বলিল যাহা তাহার উদ্দেশ্য সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করিল। অতএব ‘নুতক্ব’ বোধগম্য এবং অসংলগ্ন বা অস্পষ্ট উভয় প্রকারের কথা প্রকাশের জন্য প্রযোজ্য হয় এবং বিষয়ের এমন অবস্থার প্রতিও ইহা প্রযোজ্য হয় যাহা স্পষ্ট উক্তি সূচক। ইহা বাহ্যিক অর্থাৎ উচ্চারিত কথা এবং অভ্যন্তরীণ অর্থাৎ উপলদ্ধি উভয় ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পশু-পাখী সম্পর্কেও কথা বা উক্তির অর্থে ব্যবহার হয় যখন এই প্রয়োগ রূপকে হয় (মুফরাদাত)। কীট-পতঙ্গের মনোভাব ব্যক্ত করার জন্য তাহাদের নিজস্ব উপায় রহিয়াছে। ভ্রমণশীল পাখীরা মৌসুম পরিবর্তনের সঙ্গে এক অঞ্চল হইতে অন্য অঞ্চলে চলিয়া যায়। উহারা ঝাক বাঁধিয়া উড়ে এবং সুশৃংখল ভাবে উড়ে। পিপীলিকা দল বাঁধিয়া বাস করে এবং মৌমাছিদের খুব সুনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা ও নিয়ম রহিয়াছে। তাহাদের মধ্যে যোগাযোগের উপায় উপকরণ ছাড়া এইরূপ কিছুতেই সম্ভব হইত না। যোগাযোগের এই উপায়কে তাহাদের ভাষা বলা যাইতে পারে। হযরত দাউদ এবং সোলায়মান (আঃ)-কে পাখীর ভাষা শিক্ষা দেওয়া হইয়াছিল বলিয়া এখানে বর্ণিত হইয়াছে। ইহার অর্থ হইতে পারে যে, তিনি পক্ষীকুলকে তাঁহার কাজে ব্যবহার করার জ্ঞান অর্জন করিয়াছিলেন। এক স্থান হইতে অন্যস্থানে সংবাদ-বাহকের কাজে পাখীকে ব্যবহার করার কৌশল হযরত সোলায়মান (আঃ) কর্তৃক প্রভূত উন্নতি লাভ করিয়াছিল এবং তাঁহার শাসনাধীন বিশাল সাম্রাজ্যের ব্যবস্থাপনায় ইহার ঘন ঘন ব্যবহার করা হইত।