২০৭৬

কুরআন খণ্ড খণ্ডভাবে ক্রমে ক্রমে নাযেল হইয়াছিল। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্য মিটাইবার জন্যই এইরূপ করা হইয়াছিল, যেমনঃ (১) কুরআনের বিভিন্ন অংশ কিছু দিন অন্তর অন্তর নাযেল হইয়া উহাদের মধ্যে নিহিত কোন ভবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা প্রত্যক্ষ করার জন্য মো’মেনদিগকে সুযোগ করিয়া দিয়াছিল, ফলে তাহাদের ঈমান শক্তিশালী ও দৃঢ় হইয়াছিল। অধিকন্তু এই বিরামকালে অবিশ্বাসীদের উত্থাপিত অভিযোগের জবাব দানের জন্য ইহা অভিপ্রেত ছিল। (২)যখন মুসলমানগণের বিশেষ অবস্থায় কোন বিশেষ প্রয়োজনে পথনির্দেশের আবশ্যক হইত তখনই প্রয়োজনীয় এবং সংশ্লিষ্ট আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হইত।২৩ বৎসর কাল ব্যাপিয়া কুরআন অবতীর্ণ হইয়াছিল। উদ্দেশ্য ছিল রসূল করীম (সাঃ)-এর সঙ্গীগণ ইহাকে স্বরণ রাখিতে, শিক্ষা করিতে এবং আয়ত্ব করিতে যেন সক্ষম হইতে পারে। যদি ইহা সম্পূর্ণ একটি গ্রন্থাকারে একই সঙ্গে নাযেল করা হইত তাহা হইলে অবিশ্বাসীরা বলিতে পারিত যে, নবী করীম (সাঃ) কোন লোক দ্বারা ইহা প্রস্তুত করাইয়াছিলেন। অতঃপর এহেন সম্ভাব্য আপত্তির উত্তর নিহিত ছিল ইহার বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন উপলক্ষ্যে এবং বহু রকম অবস্থা ও পরিস্থিতির মধ্যে নাযেল হওয়ার মধ্যে। কুরআন খণ্ডে খণ্ডে নাযেল হইয়াছিল যাহাতে ইহা মুখস্থ করিয়া রাখা যায়। টুকরা টুকরাভাবে কুরআন নাযিল হইয়া বাইবেলের নিম্নলিখিত ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করিয়াছিলঃ “সে কাহাকে জ্ঞান শিক্ষা দিবে? কাহাকে বার্তা বুঝাইয়া দিবে? কি তাহাদিগকে, যাহারা দুধ ছাড়িয়াছে ও স্তন্য পানে নিবৃত্ত হইয়াছে? কেননা বিধির উপরে বিধি, বিধির উপরে বিধি, পতির উপরে পাঁতি, পাঁতির উপরে পাঁতি, এখানে একটুকু সেখানে একটুকু। শোন! তিনি অস্পষ্টবাক্‌ ওষ্ঠ ও পর-ভাষা দ্বারা এই লোকদের সহিত কথাবার্তা কহিবেন” (যিশাইয়-২৮ঃ৯-১২)।