ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসাবে রোযা (উপবাস-ব্রত) পালন কোন না কোন আকারে সকল ধর্মেই পাওয়া যায়। “অধিকাংশ ধর্মগুলিতে এবং নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ শ্রেণীর কৃষ্টির মধ্যে, উপবাস ব্রত একটি সাধারণ ভাবে নির্দেশিত ব্যাপার। আর যেখানে এই ধরণের নির্দেশ নাই, সেখানেও প্রাকৃতিক প্রয়োজনের তাকিদে অনেকেই উপবাস করিয়া থাকেন”(এনসাই-বৃট)। সাধুপুরুষ ও দিব্যজ্ঞানীগণের অভিজ্ঞতা হইতে জানা যায় যে, আধ্যাত্মিক উন্নতি ও মনের পবিত্রতা সাধনের জন্য শারীরিক সম্পর্ক সমূহ কিছুটা ছিন্ন করা এবং সাংসারিক বন্ধন হইতে কতকটা মুক্তিলাভ একান্তই প্রয়োজন। তবে, ইসলাম এই উপবাস ব্রতের মধ্যে নবরূপ, নব অর্থ ও নবতম আধ্যাত্মিক তাৎপর্য আরোপ করিয়াছে। ইসলাম রোযাকে (উপবাস পালন) পূর্ণমাত্রার আত্মোৎসর্গ স্বরূপ মনে করিয়া থাকে। ইহা আত্মবলিদানের প্রতীক। যিনি রোযা পালন করেন, তিনি যে কেবল শরীর রক্ষাকারী খাদ্য-পানীয় হইতেই বিরত থাকেন তেমন নহে, বরং সন্তানাদি জন্মদান তথা বংশবৃদ্ধির ক্রিয়াকলাপ হইতেও দূরে থাকেন। অতএব, যিনি রোযা রাখেন, তিনি তাহার প্রস্তুতির কথা জানাইয়া দেন যে, প্রয়োজন বোধে, তাহার প্রভু ও সৃষ্টিকর্তার খাতিরে তিনি তাহার সবকিছু, এমনকি তাহার জীবন পর্যন্ত কুরবানী করিয়া দিতে সামান্যও কুণ্ঠিত নহেন।