১৯৯

‘ইস্‌ম’ অর্থ ‘আইন-বিরুদ্ধ কাজ’ অর্থাৎ পাপ; যাহা একজনকে শাস্তিযোগ্য করে। (আকরাব), যাহা মানুষের মনে (বিবেকে) খারাপ লাগে (মুফরাদত)। যে চারটি বস্তুর নাম এই আয়াতে উল্লেখিত হইয়াছে ইহারাই যে কেবল নিষিদ্ধ বস্তু, তাহা নহে। ইসলাম আরও অনেক বস্তুর ব্যবহার নিষিদ্ধ করিয়াছে। সেগুলিকে সাধারণতঃ দুই শ্রেণীতে ফেলা যায়ঃ (১) ‘হারাম’ বা অবৈধ (২) ‘মম্‌নু’ বা নিষিদ্ধ। এই আয়াতে কেবল ‘হারাম’ বা অবৈধ বস্তুগুলির উল্লেখ রহিয়াছে। নিষিদ্ধ জিনিষগুলির কথা মহানবী (সাঃ)-এর হাদীসে পাওয়া যায়। ‘হারাম’ বস্তুর ব্যবহার মানুষের নৈতিক উৎকর্ষ সাধনের পথে প্রত্যক্ষভাবে বিঘ্ন ঘটায়। কিন্তু ‘মম্‌নু’ বস্তুর ব্যবহার সেই পর্যায়ের না হইলেও উহা হারামের নিকট পর্যায়ের গুরুত্ব বহন করে, তবে উভয় প্রকারের বস্তুই নিষিদ্ধ বটে। এই আয়াতে হারাম বস্তুগুলির দুইটি হইল রক্ত ও মৃত জন্তুর মাংস ভক্ষণ। এই দুইটি বস্তু যে ক্ষতিকর তাহা প্রায় স্বতঃসিদ্ধ। স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানীদের অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে এইগুলি ক্ষতিকর বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। শূকরের মাংস কেবল যে শারীরিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর তাহাই নহে, বরং তাহা নৈতিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের পক্ষেও ক্ষতিকর বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে। শূকর আবর্জনা ও ময়লা ভক্ষণ করে এবং পুঁতি গন্ধময় নোংরা-পচা কাদায় থাকিতে ভালবাসে। বিশ্রী অভ্যাসে ইহা অভ্যস্ত এবং উহার মধ্যে যৌন-বিকৃতির বদ লক্ষণসমূহ বিদ্যমান আছে। শূকর-খোরদের ফিতাক্রিমি, গলগণ্ড ক্যানসার, ট্রিচিনা (Encysted Trichina) প্রভৃতি রোগ হইয়া থাকে। শূকর-মাংস খাইলে ট্রিচিনেসিস (Trichinosis) নামক রোগ হইয়া থাকে।