১৯৫৯

মুসলমানগণ কেন যুদ্ধ করিতে বাধ্য হইয়াছিল—এই যুক্তি প্রদর্শন করিবার পর তফসীরাধীন আয়াত ইসলাম ধর্মে যুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্ণনা করিয়াছে। উদ্দেশ্য কখনো এইরূপ ছিল না যে, অপর জনগোষ্ঠীকে তাহাদের বাড়ী-ঘর, বিষয়-সম্পত্তির অধিকার হইতে বঞ্চিত করা বা তাহাদের জাতীয় স্বাধীনতা হরণ করিয়া বিদেশী শক্তির গোলামী করিতে বাধ্য করা। ইহা না ছিল বাজার আবিষ্কার করা, না নূতন উপনিবেশ স্থাপন করা, যেরূপ পশ্চিমা শক্তিগুলি করিয়া থাকে। ইহা ছিল আত্মরক্ষার জন্য এবং ইসলাম ধর্মকে নির্মূল করার হাত হইতে রক্ষার জন্য যুদ্ধ করা এবং বিবেকের স্বাধীনতা, চিন্তা ও বুদ্ধির মুক্তি প্রতিষ্ঠা করার যুদ্ধ। ইহার আরও উদ্দেশ্য ছিল অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ের স্থানগুলিকে রক্ষা করা যথা, গীর্জা, ইহুদীদের উপাসনার স্থান, মন্দির, মঠ-বা আশ্রম ইত্যাদি (২ঃ১৯৪, ২ঃ২৫৭, ৮ঃ৪০ এবং ৮ঃ৭৩)। এতদনুসারে ইসলামে যুদ্ধের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য ছিল এবং সর্বদাই ভবিষ্যতেও থাকবে—ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ইবাদতের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করা এবং বিনা কারণে অন্যায় আক্রমণের বিরুদ্ধে দেশ, সম্মান এবং স্বাধীনতা রক্ষাকল্পে যুদ্ধ করা যুদ্ধ করিবার জন্য উহা অপেক্ষা অধিকতর সঙ্গত উদ্দেশ্য অন্য কিছু হইতে পারে কি?