১৯৫৫

তফসীরাধীন আয়াত কুরবানীর প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং উহার সারাংশ ও অভ্যন্তরীণ অবস্থার উপর সমুজ্জ্বলভাবে আলোকপাত করিয়াছে। ইহা এই সবোচ্চ শিক্ষা প্রদান করে যে, কুরবানীর বাহ্যিক ক্রিয়া আল্লাহ্‌তা’লাকে সন্তুষ্ট করে না বরং এই অনুষ্ঠানের পশ্চাতে তাকওয়া, প্রেরণা ও অন্তর্নিহিত শক্তিই তাঁহাকে খুশী করে। কুরবানীকৃত পশুর গোশ্‌ত এবং রক্ত আল্লাহ্‌র নিকট পৌঁছে না, অন্তরের তাক্‌ওয়াই কেবল তাঁহার নিকট গ্রহণযোগ্য। তাহাদের নিকট আপন ও প্রিয় যাহা কিছু আছে আল্লাহ্‌তা’লা উহার সর্বপ্রকারের কুরবানী তলব করেন এবং গ্রহণ করিয়া থাকেন— আমাদের পার্থিব সহায় সম্পদ, প্রিয় ভাবাদর্শ, আমাদের সম্মান, এমনকি নিজ জীবন পর্যন্ত। বাস্তবিক পক্ষে আল্লাহ্‌তা’লা পশুর রক্ত এবং গোশত আমাদের নিকট হইতে চাহেন না এবং আশা করেন না, কিন্তু তিনি আমাদের আত্মোৎসর্গ চাহেন। তবে, ইহা মনে করা ভুল হইবে যে, যেহেতু বাহ্যিক ক্রিয়ানুষ্ঠানের আড়ালে সক্রিয় মনের ভাবই গুরত্বপূর্ণ, সেই জন্য বাহ্যিক কর্মানুষ্ঠানের কোন মূল্য নাই। ইহা সত্য যে, কুরবানীর বাহ্যিক ক্রিয়া খোসা স্বরূপ এবং উহার অভ্যন্তরীণ প্রেরণা উহার শাঁস, তদনুরূপভাবে কোন বস্তুর দেহাবরণ উহার শাঁস বা সারাংশের মতই অতি জরুরী, কারণ কোন আত্মা দেহ ছাড়া থাকে না এবং কোন শাঁস খোসা ব্যতীত থাকিতে পারে না।