১৯৩২

মানবের সৃজন এবং দেহের পরিবর্ধন ‘মৃত্যুর পরে জীবন’ এর সমর্থনে এক জোরদার যুক্তি প্রতিষ্ঠিত করে। এই সৃষ্টি ক্রমবিকাশের এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, এক ক্রম-বিবর্ধন, এক স্তর হইতে অন্য স্তরে উন্নতি, অচেতন পদার্থ হইতে এক বীজে রূপান্তর, তৎপর উহা এক ডিম্বকোষে এক ভ্রূণের আকারে বৃদ্ধি লাভ করিতে থাকে, অতঃপর ইহা এক পরিপূর্ণ মানবাকৃতির জন্মের ভিতর দিয়া সবোচ্চ সীমায় পৌঁছে। এই ক্রমবিকাশের প্রক্রিয়া, যাহাই হউক না কেন মানুষের জন্মের সাথেই বন্ধ বা শেষ হইয়া যায় না। ইহা চলিতে থাকে। এক অচেতন পদার্থ হইতে পরিপূর্ণরূপে বৃদ্ধি প্রাপ্ত এক মানব-সত্তার এই বিস্ময়কর দৈহিক ক্রমোন্নতি এক অকাট্য দলীল যে, মানবের স্রষ্টা এবং তাহার ক্রমবর্ধনের এই সকল স্তর বিন্যাসের নির্মাতা মানুষের মরিয়া যাওয়ার পরেও নূতন জীবন দান করিবার ক্ষমতা রাখেন। ইহাতে আরও প্রতিভাত হয় যে, মানুষের সৃষ্টি এবং দৈহিক পরিবর্ধন যেমন তাহার ক্রমোন্নতি ও ক্রম-বিকাশের এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, মানবের আধ্যাত্মিক ক্রমোন্নতির প্রক্রিয়াও ঠিক সেই রূপেই কাজ করিয়া থাকে। আরও একটি যুক্তি বিশ্ব-প্রকৃতি হইতে গ্রহণ করা হইয়াছে, যথা- বন্ধ্যা বা নিষ্ফলা, নীরস বা বিরান ভূপৃষ্ঠে তখন নূতন জীবনের স্পন্দন জাগে, যখন ইহার উপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়। এই ইন্দ্রিয়গোচর ব্যাপারও একই অভিন্ন সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, যে খোদা মৃত এবং বন্ধ্যা ভূমিতে নূতন জীবনের সঞ্চার করার শক্তি রাখেন, মানুষকে মৃত্যুর পর জীবিত করার শক্তিও তাঁহার নিশ্চয়ই আছে।