‘পবিত্র ভূমি’ শব্দ দ্বারা প্যালেষ্টাইন বুঝায়। খৃষ্টান লেখকরাও প্রার্থনা-সঙ্গীতে এই শব্দের ব্যাখ্যা করিয়াছে এই দেশের অধিকারী অর্থে ‘আল্লাহ্র অঙ্গীকার চিহ্ন’ কেনানের উত্তরাধিকারী হওয়া। ‘দাউদের কিতাব’ শব্দের সূত্র বাইবেলের অন্তর্গত ‘গীত সংহিতা’ ৩৭ঃ৯১১, ২২ এবং ২৯ শ্লোক বা প্রার্থনা সঙ্গীতের প্রতি নির্দেশ করে। দ্বিতীয় বিবরণ-২৮ঃ১১ এবং ৩৪ঃ৪ তেও এক ভবিষ্যদ্বাণী রহিয়াছে যে, প্যালেষ্টাইন ইসরাঈলীদিগকে দেওয়া হইবে। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর দ্বিতীয় খলীফা হযরত ওমর (রাঃ)-এর সময়ে মুসলমানগণের বিজয়ের পূর্ব পর্যন্ত প্যালেষ্টাইন খৃষ্টানদিগের অধিকারে ছিল। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তফসীরাধীন আয়াতে মুসলিম সৈন্য বাহিনীর এই প্যালেষ্টাইন বিজয়ের প্রতিও ইশারা রহিয়াছে বলা যাইতে পারে। ৯২ বৎসরের সংক্ষিপ্ত অবসর বাদে প্যালেষ্টাইন প্রায় ১৩৫০ বৎসর মুসলিম অধিকারে ছিল। তারপর ক্রুসেডের যুদ্ধের সময় ইহা হাত বদল হইয়াছিল, আমাদের বর্তমান সময় পর্যন্ত তথাকথিত গণতান্ত্রিক খৃষ্টান-শক্তিগুলির অসাধু পরিকল্পনার মাধ্যমে প্যালেষ্টাইন নামীয় দেশটির অস্তিত্ব প্রায় বিলুপ্ত এবং ইহার ধ্বংসাবশেষের উপরে গঠিত হইয়াছে ইসরাঈল রাষ্ট্র। বিচ্ছিন্ন ইহুদী জাতি ২০০০ (দুই হাজার বৎসর) লক্ষ্যহীনভাবে বনে জংঙ্গলে ঘুরিয়া আবার তাহাদের স্বস্থানে ফিরিয়া আসিয়াছে। কিন্তু এই জ্বলন্ত ঐতিহাসিক ঘটনাটিও ঘটিয়াছে কুরআনের ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতা পূর্ণ করিতে (১৭ঃ১০৫)। যাহা হউক ইহাও এক স্বল্পস্থায়ী অধ্যায়। ইহার পূর্ণ বিজয় মুসলিম জাতির জন্য নির্ধারিত আছে। একদিন না একদিন— বিলম্বে নহে বরং শীঘ্রই—প্যালেষ্টাইন মুসলমানদিগের পুনর্দখলে আসবে। ইহা ঐশী ভবিষ্যদ্বাণী, এই ঐশী ভবিষ্যদ্বাণীকে কেহ পরিবর্তন করিতে পারে না।