১৯১১

বাইবেলে উল্লেখ রহিয়াছে যে, সিরিয়া এরং আকাবা উপসাগরের মধ্যবর্তী আরবের উত্তরে অবিস্থত ‘উয’ নামক অঞ্চলে হযরত আইউব (আঃ) বাস করিতেন। সেখানে ইহা বর্ণিত হইয়াছে যে, ইসরাঈলীগণ মিশর ত্যাগ করিবার পূর্বে হযরত আইউব (আঃ) উক্ত স্থানে বাস করিতেন। কোন কোন ইহুদী লেখকের মতে হযরত মূসা (আঃ)-এর প্রায় দুইশত বৎসর পূর্বে আইউব (আঃ) বাস করিতেন। অন্যান্য লেখকের মতে আইউব (আঃ) ছিলেন মূসা (আঃ)-এর স্বদেশবাসী, কিন্তু তিনি ইসরাঈল বংশীয় নবী ছিলেন না। তিনি হযরত ইসরাঈল (আঃ)-এর বড় ভাই ইসাও-এর বংশধর ছিলেন। পুরাতন নিয়মের গ্রন্থাবলীর মধ্যে আইউব (আঃ)-এর গ্রন্থটিই এই ব্যাপারে একমাত্র কিতাব যাহার মধ্যে ‘যেহোবা’ (ইহুদী কর্তৃক খোদার নাম রূপে ব্যবহৃত) শব্দটি বাদ দিয়া মূসায়ী শরীয়তের এবং ইহুদী ধর্মের সমস্ত ইতিহাসের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। হযরত আইউব (আঃ) (Job) সম্পর্কে কয়েকটি সংশ্লিষ্ট ঘটনা উল্লেখের মধ্যেই কুরআন করীম বর্তমান ও পরবর্তী আয়াতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখিয়াছে। বর্ণিত হইয়াছে যে, তিনি আল্লাহ্‌র পবিত্র বান্দা ছিলেন এবং তাঁহাকে অনেক দুঃখ-কষ্ট ভোগ করিতে হইয়াছে, যাহার ফলে তিনি তাঁহার পরিবার এবং অনুসারীগণ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছিলেন, যাহারা পরবর্তী সময়ে বহুগুণে বৃদ্ধি পাইয়া তাহার সহিত যোগ দিতে বাধ্য হইয়াছিল। হযরত আইউব (আঃ)-এর কথা ৪ঃ১৬৪; ৬ঃ৮৫ এবং ৩৮ঃ৪২ আয়াতসমূহের মধ্যে হযরত দাউদ এবং সুলায়মান (আঃ)-এর সাথে বর্ণিত হইয়াছে। ইহাতে প্রমাণিত হয় যে, এই দুই জন গৌরবপূর্ণ নবীর মত, তিনিও একজন প্রভাবশালী ও সমৃদ্ধিশালী মহান ব্যক্তি ছিলেন এবং তাঁহাদের মতই বহু পরীক্ষা এবং কঠোর দুঃখ-দুর্দশার মধ্য দিয়া তাহাকেও অতিক্রম করিতে হইয়াছিল, যাহা তিনি অনুকরণীয়ভাবে ধৈর্য ও দৃঢ়তার সঙ্গে সহ্য করিয়াছিলেন। ভয়ানক অত্যাচার ও দুদর্শাগ্রস্ত অবস্থার মধ্যেও হযরত আইউব (আঃ) কর্তৃক প্রদর্শিত সাহস ও বীরত্বপূর্ণ সহিষ্ণুতা কিংবদন্তীর প্রবাদ বাক্য হইয়া রহিয়াছে। (‘যব’ অধ্যায়ের অধীন যিউ এনসাইক এবং ‘আইউব’ অধ্যায়ের অধীন এনসাইক অব ইসলাম দ্রষ্টব্য)