১৮৫৮

তফসীরাধীন এবং পূর্ববর্তী আয়াতের ইঙ্গিত বোধ হয় সভ্য জীবনের সুযোগ-সুবিধা ও আরাম-উপভোগের আনুসঙ্গিক উপকরণসমূহের প্রতি করা হইয়াছে। উক্ত দুই আয়াত এই বাস্তব সত্যের প্রতি ইঙ্গিত করিতেছে যে, মানুষের জীবনের প্রাথমিক প্রয়োজন খাদ্য, পানীয়বস্তু, বস্ত্র এবং আশ্রয় বা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যে কোন সভ্য সরকারের প্রথম কর্তব্য এবং কোন সমাজকে কেবল তখনই সভ্য সমাজ বলা যায় যখন উহার অধীনে সকল লোক এই চাহিদাগুলি পর্যাপ্তরূপে প্রাপ্ত হয়। মানবজাতি ততক্ষণ পর্যন্ত সামাজিক আন্দোলনে অশান্তিতে ভুগিতে থাকিবে এবং মানব সমাজে নৈতিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অকৃত্রিম উন্নতি হইবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না এরূপ গুরুতর অর্থনৈতিক অসমতা, যেমন সমাজের এক শ্রেণীর লোক সম্পদে গড়াগড়ি করে এবং অন্যরা অনাহারে মৃত্যুবরণ করে, এই অবস্থার অবসান করা হয়। এখানে হযরত আদম (আঃ)-কে বলা হইয়াছে যে, তিনি এমন একস্থানে বসবাস করিবেন যেখানে জীবনের সকল প্রয়োজন এবং সকল সুখ সুবিধা ইহার বাসিন্দাগণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকিবে। এই অবস্থা কুরআন করীমের অনত্র এইভাবে বর্ণিত হইয়াছে, এবং উহা হইতে যেখানে তোমাদের ইচ্ছা তৃপ্তিসহকারে আহার কর’ (২ঃ৩৬)। তফসীরাধীন আয়াতেও প্রতীয়মান হয় যে, হযরত আদম (আঃ)-এর সময় হইতে এক নূতন সমাজ ব্যবস্থা আরম্ভ হইয়াছিল এবং তিনি এক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করিয়াছিলেন, যাহা মানবজাতির সামাজিক অগ্রগতির পথ দেখাইয়াছিল।