ইসরাঈলীগণ অতি দীর্ঘকাল যাবৎ ফেরাউনদের অত্যাচারে শৃংখলাবদ্ধ থাকার পরিণতিতে তাহারা পুরুষোচিত ঐ সকল গুণাবলী হারাইয়া বসিয়াছিল যাহা একটি জাতিকে পরিশ্রমী, নির্ভিক এবং শৌর্যপূর্ণ করিয়া তোলে। ঐশী পরিকল্পনানুযায়ী তাহাদের জন্য কেনান জয় করিয়া রাজত্ব করা নির্ধারিত ছিল। অতএব হযরত মূসা (আঃ) তাহাদিগকে মিশরের বাহিরে লইয়া আসার পর তাহাদিগকে সিনাই অঞ্চলের রৌদ্র-দগ্ধ অনুর্বর অঞ্চলে বাস করিতে হইয়াছিল যাহাতে তাহারা উন্মুক্ত ও কষ্ট-সাধ্য জীবন যাপনে অভ্যস্ত হইয়া উঠে এবং এইরূপে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য অত্যাবশ্যক গুণাবলী ও যোগ্যতা অর্জন করিয়া তাহারা উন্নতি করিতে পারে। কিন্তু সুদীর্ঘ কালের দাসত্ব বন্ধনে থাকিয়া তাহারা সর্বপ্রকার উদ্যম হারাইয়া ফেলিয়াছিল এবং অস্বাভাবিক অনুদীপক এবং নিস্তেজ জীবনে অভ্যস্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এমতাবস্থায় তাহারা যখন দেখিল যে, মরুভূমি ও নির্জন প্রান্তরে তাহাদিগকে বাস করিতে হইবে, যেখানে জীবনের কোন সুখ-সুবিধা পাওয়ার কোন অবস্থা ছিল না, এমনকি খাদ্যেরও অভাব ছিল, তখন তাহারা আতঙ্কিত ও অস্থির হইয়া উত্তেজিত হইল। তাহারা মূসা (আঃ)-এর সঙ্গে এই বলিয়া কলহে লিপ্ত হইয়াছিল, “হায় হায়! আমরা মিশর দেশে সদাপ্রভুর হস্তে কেন মরি নাই? তখন মাংসের হাড়ীর কাছে বসিতাম, তৃপ্তি পর্যন্ত রুটি ভোজন করিতাম; তোমরা তো এই সমস্ত সমাজকে ক্ষুধায় মারিয়া ফেলিতে আমাদিগকে বাহির করিয়া এই প্রান্তরে আনিয়াছ (যাত্রা -১৬ঃ৩)।” আল্লাহ্তা’লা তাহাদের বিড়বিড়ানি শুনিলেন এবং এই অকৃতজ্ঞ লোকদিগকে বলিবার জন্য, মূসা (আঃ)-কে আদেশ করিলেনঃ ‘আমি ইসরাঈল সন্তানদের বচসা শুনিয়াছি, তুমি তাহাদিগকে বল, সায়ং কালে তোমরা মাংস ভোজন করিবে ও প্রাতঃকালে অন্নে তৃপ্ত হইবে, তখন জানিতে পারিবে যে, আমি সদাপ্রভু, তোমাদের ঈশ্বর।” ঐশী প্রতিশ্রুতি কিভাবে পূর্ণ হইয়াছিল উহা বাইবেলে বিস্তারিত বর্ণিত হইয়াছে (যাত্রাপুস্তক-১৬ঃ১২-১৫) আরো দেখুন টীকা ৯৮ এবং ৯৯।