ইহুদী জাতি নিজেদের আত্মিক অধঃপতনের যুগে আধুনিক অধ্যাত্ববাদী, থিওসফিষ্ট ও হিন্দু যোগীদের ন্যায় যাদু বিদ্যার চর্চা শুরু করিয়াছিল। আঁ-হযরত (সাঃ)-এর যমানায় মদীনাবাসী ইহুদীগণের মধ্যেও কেহ কেহ এই শখের যাদুবিদ্যার আশ্রয় নিয়াছিল বলিয়া মনে হয়। এই কারণেই নবী করীম (সাঃ)-কে মিথ্যা প্রমাণিত করিবার জন্য তাহারা মোশরেকদিগকে পরামর্শ দিয়াছিল যে, তাহারা যেন নবী করীম (সাঃ)-কে মানবাত্তা সম্পর্কে প্রশ্ন করে। পবিত্র কুরআন তফসীরাধীন আয়াত দ্বারা তাহাদিগকে এই বলিয়া উত্তর দিতেছে যে, আল্লাহ্র হুকুমে আত্মার উৎপত্তি হয় এবং ইহা তাঁহারই হুকুমে ক্রমশঃ বলীয়ান হয়। ইহা ছাড়া অন্য যাহা কিছু যাদুবিদ্যা বা তথাকথিত আধ্যাত্মিক চর্চার বলে অর্জিত বলিয়া দাবী করা হয় তাহা সমস্তই দমবাজি বা ভান মাত্র। হযরত আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ)-এর মতে মানবাত্মার প্রকৃতি সম্পর্কে প্রশ্নটি মক্কাতে প্রথমে আঁ-হযরত (সাঃ)-কে করিয়াছিল মক্কার কোরায়শগণ এবং ইহার পরে মদীনাতে ইহুদীরা এই প্রশ্ন উত্থাপন করিয়াছিল। আল্লাহ্তা’লার সরাসরি হুকুমে আত্মার সৃষ্টি বলিয়া এখানে বর্ণিত হইয়াছে। কুরআন মজীদ অনুযায়ী সকল সৃষ্টি দুইটি শ্রেণীভুক্তঃ (১) আদি সৃষ্টি যাহা পূর্ব হইতে সৃষ্ট কোন বস্তু বা জড় পদার্থের অবলম্বন ব্যতিরেকে সৃজন করা হইয়াছে, (২) পরবর্তী সৃষ্টি যাহা পূর্বে সৃজিত উপায়, উপকরণ এবং বস্তুর সাহায্য অবলম্বনে সৃষ্টি করা হইয়াছে। প্রথমোক্ত সৃষ্টি ‘আম্র’ অর্থাৎ হুকুমের পর্যায়ভুক্ত (২ঃ১১৮ দ্রষ্টব্য) এবং পরবর্তী সৃষ্টিকে বলা হয় খাল্ক (সৃজন করিতে থাকা)। মানবাত্মা প্রথমোক্তা সৃষ্টির শ্রেণীভুক্ত। রূহ শব্দের অর্থ ইলহাম বা ঐশী-বাণীও হয় (লেইন)। পূর্বে বর্ণিত প্রসঙ্গ এই অর্থকে সমর্থন করে।