১৫২২

“সাবআম মিনাল মাসানী” অর্থ পুনঃ পুনঃ আবৃত্ত সপ্ত আয়াত। হযরত উমর, আলী, ইবনে আব্বাস এবং ইবনে মাসুদ (রাঃ)-এর মত বিখ্যাত বুযুর্গানের মতে উক্ত শব্দাবলী (বাক্যাংশ) কুরআনের প্রারম্ভিক সূরা আল্‌-ফাতেহার প্রতি নির্দেশ করে, কারণ ইহা বার বার প্রত্যেক নামাযের প্রত্যেক রাকায়াতে আরত্তি করা হয়। হযরত নবী করীম (সাঃ) বলিয়াছেন “আল সাব আল মাসানী, কুরআন করীমের প্রথম পরিচ্ছেদ” (বুখারী)। এই সূরাকে কুরআনের জননী (উম্মুল কুরআন) এবং কুরআনের প্রথম অধ্যায় ফাতেহাতুল কিতাবও বলা হয়। হযরত যাজ্জাজ ও হযরত হাইয়ানের মতে ইহার এই নাম (ফাতেহা) দেওয়া হইয়াছে এই কারণে যে, ইহা আল্লাহ্‌তা’লার গুণ এবং প্রশংসা কীর্তন করে। সূরা ফাতেহার পরবর্তী বাকী সমগ্র অংশকে মহান কুরআন (আল্ কুরআনুল আযীম) বলা হইয়াছে। অবশ্য এই নাম প্রথম সূরার জন্যও প্রযোজ্য, যেহেতু কোন পুস্তকের কোন অংশকেও সেই পুস্তকের নামেই অভিহিত করা হয়। হযরত নবী করীম (সাঃ) হইতে বর্ণিত আছে যে, কুরআনের প্রারম্ভিক সূরা মহান পবিত্র কুরআন (মুসনাদ,২য় খণ্ড পৃঃ ৪৪৮)। প্রকৃতপক্ষে এই সূরা ফাতেহা সমস্ত কুরআনের সারমর্ম বা সারাংশ অথবা যেমন বলা হইয়া থাকে ইহা কুরআনের ক্ষুদ্র প্রতিরূপ। কারণ সমূদয় কুরআনের চুম্বক বা সারাংশ এই সূরা ফাতেহার মধ্যে সন্নিবিষ্ট করা হইয়াছে। মাস্‌না বহুবচনে মাসানী। মাস্‌না-এর অর্থ প্রশংসা ও গুণ কীর্তন করা। এই আয়াতের মর্ম হইতেছেঃ সূরা ফাতেহা আল্লাহ্‌তা’লার সকল সিফাত বা গুণাবলীর বিস্তারিত ও ব্যাপক বর্ণনাকারী। ‘মাসানী’-এর অর্থ উপত্যকার মোড় ঘুরা ও দিক পরিবর্তন করাও হয়। এই অর্থে আয়াতের মর্ম হইতেছে যে, আল্ ফাতেহা মানুষের জীবনের মোড় আল্লাহ্‌র দিকে ঘুরাইয়া দেয় এবং মানুষ ও আল্লাহ্‌র মধ্যে সম্পর্কের বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।