যেহেতু কুরআন করীমে বারংবার উল্লেখ রহিয়াছে যে, সকল প্রকার জীবনের উৎস পানি (২ঃ৩১, ২৫ঃ৫৫, ৭৭ঃ২১, ও ৮৬ঃ৭) “তাঁহার আরশ পানির উপর অবস্থিত” এর অর্থ হইবে যে, আল্লাহ্তা’লার গুণাবলী তাঁহার সৃষ্টজীবের মাধ্যমে প্রকাশিত, সর্বোপরি মানবের মাধ্যমে, সকল প্রকার সৃষ্টির চরমত্বের বিকাশস্থল অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা মানুষ দ্বারা আল্লাহ্তা’লার কামেল সিফ্ত বা পূর্ণ গুণাবলী প্রকাশ পায়। আবার উক্ত আয়াতের এই অর্থও হয় যে, আল্লাহ্তা’লার সিফ্ত বা গুণাবলী মানুষের উপর তাঁহার ‘ওহীর’ দ্বারা প্রকাশ পায়। যেমন কুরআন শরীফের একাধিক স্থানে পানিকে ওহীর সঙ্গে তুলনা করা হইয়াছে। “মৃত্যুর পর নিশ্চয় তোমরা পুনরুত্থিত হইবে” এই বাক্যে বলা হইয়াছে যে, এই সৃষ্টির বিধান ইহাই ব্যক্ত করিতেছে যে, মানুষকে তাহার মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করা হইবে। কারণ এই বিশাল জগতের সৃষ্টি,যাহাতে এক স্বাধীন ও সংকল্পবদ্ধ মানব জীবনের অস্তিত্ব বিরাজ করিতে পারে, পরিষ্কার নির্দেশ করিতেছে যে, এই মানব জীবন সৃষ্টির এক মহৎ উদ্দেশ্য রহিয়াছে, কিন্তু ইহলৌকিক জীবন স্থায়ী নহে, এক অস্থায়ী অস্তিত্ব, যাহা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে অতিবাহিত করিতে হয়। অতঃপর, এই ক্ষণস্থায়ী বা কিছু কালের পরীক্ষা ক্ষেত্র অতিক্রম করিয়া তাহাকে অবশ্যই একদিন পারলৌকিক বা স্থায়ী জীবনে প্রবেশ করিতে হইবে এবং উহাই মানুষের চিরস্থায়ী বাসস্থান যেখানে তাহাকে উল্লেখিত পরীক্ষার ফলাফল বা পুরস্কার প্রদান করা হইবে।