১১৮

আঁ-হযরত (সাঃ)-এর সময়ে মদীনাতে তিনটি ইহুদী গোত্র বসবাস করিত। তাহারা হইল বনু কাইনুকা, বনু নাযীর এবং বনু কুরাইযা। দুইটি পৌত্তলিক গোত্রও মদীনাতে ছিল—একটি হইল ‘আউস’ ও অপরটি খাযরাজ। ইহুদীদের দুইটি গোত্র বনু কাইনুকা ও বনু কুরাইযা আউসদের পক্ষে ছিল, আর বনু নাযীর ছিল খাযরাজদের পক্ষে। অতএব, যখনই দুইটি পৌত্তলিক গোত্রের মাঝে যুদ্ধ বাধিত, তখনই ইহুদীরাও যুদ্ধে জড়িত হইয়া পড়িত। এই সব যুদ্ধে যদি কোন ইহুদী বন্দী হইত, তখন সকল ইহুদী মিলিয়া চাঁদা তুলিয়া মুক্তি-পণ যোগাইত। তাহারা অ-ইহুদীর হাতে ইহুদীর বন্দী থাকাকে অত্যন্ত গর্হিত বিষয় বলিয়া মনে করিত। কুরআন তাহাদের এইরূপ সামঞ্জস্যহীন আচরণের বিরোধিতা করিয়া বলিতেছে, তাহাদের ধর্ম কেবল ইহুদীকে বন্দী করার বা বন্দী হওয়ার বিষয়ই নিষেধ করে না, বরং পারস্পরিক যুদ্ধরত হওয়াও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং হতাহত করাও নিষেধ করে। অথচ ইহুদীরা এই নিষিদ্ধ কাজগুলিতে খোলাখুলিভাবে লিপ্ত আছে। কুরআন বলে, এর চাইতে জঘন্য কাজ কি হইতে পারে যে, তাহারা ধর্মগ্রন্থের একাংশ পালন করে এবং অন্য অংশ বর্জন করে। এইভাবে একাংশ পূর্ণ ও বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে তাহারা সারা ধর্মগ্রন্থটাকে বিশ্বস্ততার মর্যাদা দেয়। অতএব, অপরাংশকে প্রত্যাখ্যান করার মাঝে তাহাদের বিকল মানসিকতাই পরিষ্কার ফুটিয়া উঠে। ‘ইহুদী বন্দী করণ নিষেধ’-এর জন্য দেখুন লেবীয় পুস্তক- ২৫ঃ৩৯-৪৩, ৪৭-৪৯, ৫৪-৫৫; নহিমিয় ৫ঃ৮।